রাজধানী ঢাকায় এখনো কাটেনি ঈদের আমেজ। গত শনিবার ছিল পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের পর সোমবার থেকে অফিস খুললেও তা জমে উঠেনি। অধিকাংশ অফিস ছিল ফাঁকা। কেউ কেউ অফিসে আসলেও অনেকেই ছিলেন অনুপস্থিত। গ্রাম থেকে অধিকাংশ মানুষ ঢাকায় ফেরেননি। তাইতো ঈদের পঞ্চম দিনেও রাজধানীর সড়কে যানবাহনের তেমন চাপ দেখা যায়নি। বেশিরভাগ সড়কই ছিল ফাঁকা।
বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ঘুরে সেই চিরাচরিত দৃশ্য দেখা যায়নি। মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, বিজয় স্বরণী, তেজগাঁও, হাতিরঝিল, গুলশান, বাড্ডা লিং রোডসহ ঢাকার আর কোথাও তেমন যানবাহনের চাপ দেখা যায়নি।
এছাড়া কাকরাইল, শাহবাগ, সাইন্সল্যাব ছিল যানজট মুক্ত। পল্টন, গুলিস্তানে কিছু গাড়ির চাপ থাকলেও সিগন্যালে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৫-৭মিনিট। তাই নির্ধারিত সময়ের আগেই গন্তব্যে পৌছতে পারছেন যাত্রীরা।
আয়াত পরিবহনের যাত্রী সায়মা হক। থাকেন রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায়। যাবেন ফার্মগেট। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সায়মা বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, অন্য সময় যেখানে বাসা থেকে বের হলে কমপক্ষে ১ ঘন্টা হাতে নিয়ে বের হতাম। খিলগাঁও থেকে ফার্মগেট আসতে এক দেড় ঘন্টা লেগে যেতো। আজ ১৫মিনিটে চলে এসেছি। ভালই লাগছে।
তিনি আরো বলেন, রাজধানী এরকম থাকলে ভালই হতো। তবে সেটাতো আর সম্ভব না। রাজধানীর মানুষ ঈদ উদযাপন করতে গ্রামে গিয়েছে। ফিরলেই সেই শুরু হবে সেই চিরচেনা যুদ্ধের। এই কয়েকদিন শান্তি আর কি।
মৌচাক থেকে বাংলামোটর যাবেন মইন আহমেদ। কাজ করেন একটি জাতীয় দৈনিকে। এবার ঈদের ছুটি পাননি। ঢাকায় সহকর্মীদের সঙ্গে অফিসে ঈদ করেছেন।
তিনি বলেন, সব সময় মৌচাক থেকে বাংলামোটর আসতে কমপক্ষে ৪৫মিনিট লাগে। মগবাজার সিগন্যাল পার হতে অনেক সময় ঘন্টাও পার হয়ে যায়। ঈদের পর যানজট না থাকায় ৫/৬ মিনিট লাগছে। মগবাজারের চিরাচরিত সেই জ্যাম আর নেই।
এদিকে ফাঁকা সড়কে রিক্সায় ঘুরতে দেখা গেছে অনেককে। পরিবার নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ঘুরতে এসেছেন পুরান ঢাকার ফাহিম। তিনি বলেন, খুব ভাল লাগছে। ফাকা রাস্তায় পরিবার নিয়ে আরামে ঘুরছি। বাচারা খুব এনজয় করছে।
ফাঁকা ঢাকায় কম সময়ে যাত্রীরা নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন। তবে বিজয় সরণী মোড়ের চিত্রটা ছিল ভিন্ন। স্বাভাবিক দিনের মতোই সেখানে সকাল থেকে গাড়ির চাপ দেখা গেছে।
বুধবার ১২টা। শাহবাগ মোড়ের সিগন্যাল পার হওয়া গেছে ১মিনিটে। শাহবাগ মোড়ে বাস চালক সোহাগ সরদার বলেন, যানজট নেই। কম সময়ে যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে পৌছতে পারছি। তবে যাত্রীর চাপ নেই বললেই চলে। সিট খালি যাচ্ছে, যাত্রী নেই, এই ট্রিপে তেলের পয়সাও উঠবেনা।
ধানমন্ডি এলাকায় ট্রাফিকের দায়িত্বে ছিলেন পুলিশ সদস্য সোহেল। তিনি বলেন, গাড়ির চাপ কম, আমাদেরও চাপ কম। রিলাক্সে আছি। পেইনটা কম। ভালই লাগছে। রাস্তা ফাঁকা পেয়ে মোটরসাইকেল চালকরা বেপরোয়াভাবে ছুটে। এটা একটা ঝুঁকি। তবে বড় কোনো বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে ধানমন্ডির ফুটপাতের রিচফুট ব্যবসায়ী হাসান বলেন, এবার মনে হয় মানুষ অনেক ছুটি পাইছে। ঈদের ৫দিন শেষ হলেও রাস্তা ফাঁকা। আমাদের কাস্টমারও কম। হয়তো দুই/একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। মানুষ আবার ফিরতে শুরু করবে।